জমিয়ে আড্ডা ইন্টারনেট
 

ওরাও সুখে আছে


জলকণা

রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে,
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে
আকাশ দেখা আমার অভ্যেস ।

সকালের সূর্যটাকে
দেখতে বেশ লাগে...
একটু-একটু করে উঁকি দেয়।
আকাশ দেখি , গাছপালা দেখি,
আশেপাশের বাড়িঘর ;
আর ভাবি সুন্দর একটা দিনের
আবার সূচনা হল ।

গর্বে ভরে ওঠে বুক
স্বাধীন দেশে বাঁচার কতো সুখ ।

সেদিন হঠাৎ চোখ পড়লো নীচের দিকে...
একটি পুচকি মেয়ে, আধময়লা জামা গায়ে,
কাগজ কুড়োচ্ছে একটা ছোট্ট লাঠি দিয়ে ।
মাথায় ওর তেল-না-দেওয়া চুলের জটা,
পায়ে নেই জুতো , পিঠে একটা থলে...
যেটা আবার ওর থেকেও বড় ।

একটু নীচু হয়ে মুখটা দেখার চেষ্টা করি ।
আমায় দেখে, ফেললো সে হেসে ।
অদ্ভুত সে হাসি, যা আমাকে
বারবার মনে করিয়ে দিল,
যে দেশ নিয়ে এতো গর্ব তোমার ;
যার উন্নতিতে তুমি সদা পুলকিত ...
সে দেশে আমরাও আছি ,
বেঁচে আছি ... ভালো আছি , সুখে আছি ...
দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে ;
যেখানে দু'বেলা জোটেনা অন্ন,
নেই পরনের বাস , নেই কোন নির্দিষ্ট ঠিকানা ।
তবুও, আমরা বেঁচে আছি ...ভালো আছি, সুখে আছি ।

হঠাৎ দেখি আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে সে ।
ঝাপসা আমার দৃষ্টি...
পিঠের ঝুলিটা ক্রমশঃ যাচ্ছে হারিয়ে
তার সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে ছোট্ট সেই মেয়েটি ।

তবু'ও বলে ওরা...
বেঁচে আছি ভালো আছি সুখে আছি ।



১৯ মার্চ ২০০৮